যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোল্লা আমীর হোসেন যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেক জালিয়াতির মাধ্যমে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়টি ধরে ফেলেন ।যাতে ব্যবহার করা হয়েছে নাম সর্বস্ব দুটি প্রতিষ্ঠানকে। এ বিষয়ে যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, তদন্তে জড়িতের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যশোর শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বোর্ড থেকে সরকারি কোষাগারে জমার জন্য আয়কর ও ভ্যাট বাবদ ১০ হাজার ৩৬ টাকার ৯টি চেক ইস্যু করে চলতি অর্থবছরে। এ ৯টি চেক জালিয়াতি করে ভেনাস প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিংয়ের নামে ১ কোটি ৮৯ লাখ ১২ হাজার ১০ টাকা এবং শাহী লাল স্টোরের নামে ৬১ লাখ ৩২ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। অথচ শাহী লাল স্টোর ও ভেনাস প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, ভেনাস প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিংয়ের মালিক শরিফুল ইসলাম বাবুর যশোর রাজারহাটস্থ বাসভবনের সাথে রয়েছে একটি প্রিন্টিং প্রেস। এ প্রতিষ্ঠানটির নাম দেশ প্রিন্টার্স। এই সাইনবোর্ডে যোগাযোগের জন্য বাবুর মোবাইল নম্বর দেওয়া রয়েছে। বাবুর প্রতিবেদক’কে বলেন, বোর্ডের কর্মচারী কামাল ও সালাম তার কাছ থেকে প্যাড, সিল ও চেক নিয়ে বানিয়ে নেন। এ কাজে তাকে ব্যবহার করা হয়েছে মাত্র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, যশোর শিক্ষা বোর্ড এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু এই সিন্ডিকেটের সাথে জরিত। এবং সুষ্ঠু তদন্ত করলে বিষয়টি বেড়িয়ে আসবে।
যশোর শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোল্লা আমীর হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার সন্দেহ হয় এবং আমাদের তদন্তেই বিষয়টি ধরা পড়েছে। আর আমি একটি প্রোপার চ্যানেলে স্বাক্ষর হয়ে আসা চেকে সর্বশেষ স্বাক্ষর করি। হিসাব শাখার ও সচিবের স্বাক্ষর থাকায় যাচাই করার প্রয়োজন হয় না।
তিনি আরও বলেন, তদন্তে জড়িতরা শনাক্ত হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, এ ঘটনায় শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক কেএম রব্বানিকে প্রধান করে ৫ সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে তাদের রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোল্লা আমীরকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য ও জালিয়াত চক্রকে রক্ষা করার জন্যই একটি মহল নানারকম পায়তারায় লিপ্ত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানান, একটি অসাধু মহল শুধু নিজের স্বার্থকে পুঁজি করে চিহ্নিত সংঘবদ্ধ চক্রটি যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তাকে ধ্বংস করতে চায়। তারা মূলত চেয়ারম্যানের জনপ্রিয়তা আর সফলতাকে ধ্বংস করে সৎ নির্ভীক আদর্শবান চেয়ারম্যানের পরিবর্তে তাদের মতো দূর্নীতিবাজ কাউকে এই চেয়ারের বসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
এসব চক্রান্ত থেকে বিরত না থাকলে তাদের সমুচিত জবাব দেয়া হবে বলেও জানান শিক্ষা বোর্ডের অনেক কর্মকর্তা। একাধিক শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাদের মধ্যে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের প্রতি তাঁদের সহানুভূতি ও ভালবাসারই বহিঃপ্রকাশ লক্ষ্য করা গেছে।
একাধিক কর্মকর্তার দাবি, স্থানীয় ও বোর্ডের কিছু দুর্নীতিবাজরা জালিয়াতির সাথে জড়িত আঃ সালামকে রক্ষার জন্য চেয়ারম্যানের উপর দায় চাপাচ্ছে। এ অপতৎপরতা তদন্ত কাজকে ব্যহত করতে পারে।
Leave a Reply