রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৫৭ অপরাহ্ন
ইবি প্রতিনিধিঃ
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণকে কটুক্তির অভিযোগ উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আরিফুজ্জামানকে লাঞ্চিত করে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। পরে অভিযুক্তকে ইবি থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ভাষণ দিবস উপলক্ষ্যে সকাল ৮ টা থেকে বিভিন্ন আবাসিক হল ও ভবনে ভাষণ বাজানো হচ্ছিল। এ নিয়ে সকাল ১০টার দিকে মিম ইসলাম নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে একটি ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, ‘ম্যাক্সিমাম ডিপার্টমেন্টে এখন পরীক্ষা চলে, এভাবে এত লাউডলি মাইক বাজালে পড়াশোনা কিভাবে করবো!’
সেই স্ট্যাটাসে আরিফুজ্জামান নামে একটি আইডি থেকে এক কমেন্টে লেখা ছিল, ‘জাতির আব্বার ভাষণ, তুমি তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষে চলে যাচ্ছে। দুইটি হাসির ইমোজি।’ সেখানে মীম প্রতুত্তরে লেখেন, ‘একটু সাউন্ড কমিয়ে বাজালেও তো হয়।’
সেখানে আরিফ আবার লিখেন, ‘তুমিতো জানো জাতীর আব্বু এই শক্তিশালী ভাষণেই আজ জাতি স্বাধীন এবং সিঙ্গাপুর এর চেয়ে উন্নত। তাই জোওে বাজিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা জানানো হচ্ছে। না পড়লেও চলবে। এমনি সিঙ্গাপুর এটা।’
এর প্রেক্ষিতে বাংলা বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিব প্রক্টর, আইন ও রাস্ট্র বিজ্ঞান বিভাগে অভিযোগ করেন। সেখানে তিনি দাবী করেন, আরিফুজ্জামান নামে একটি আইডি থেকে বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তিমূলক মন্তব্য করে যাচ্ছে। একইসাথে তিনি আরিফের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থার দাবি জানান।
অভিযোগের পরেও কার্যত ব্যবস্থা না নেওয়ায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাকিব এবং ইবি ছাত্রলীগের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের আরিফ অভিযুক্তকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক এলাকায় লাঞ্চিত করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের একাধিক সদস্য বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রেমী ও মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী সকলেই এ ঘটনায় মর্মাহত এবং আমরা আশা করেছিলাম আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করবেন ইবি প্রশাসন কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেল প্রক্টরের নির্দেশে রাতেই ছেঁড়ে দিয়েছেন ইবি থানার ওসি। আসলে কোন্ পথে হাটছেন প্রশাসন?
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, যে বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে সেটি অভিযুক্তের ফোনে পাওয়া যায়নি। আমরা প্রক্টরের নির্দেশে ফোনটি রেখে তাকে ছেঁড়ে দিয়েছি।
ছাত্রলীগ নেতা রাকিব বলেন, ফোনে পাওয়া যাবে কেন? তার আইডির স্কীন শর্ট আমরা দিয়েছি। আমি ছেঁড়ে দেয়ার কথা শুনে হতবাক হয়েছি। আমার গাঁয়ে একবিন্দু রক্ত থাকতে জাতির পিতার কটুক্তিকারীকে ছাঁড় দেয়া হবে না।
ইবি প্রক্টরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ওসির সাথে আমার কথা হয়েছে। ফোন জব্দ করে তাকে ছেঁড়ে দেয়া হয়েছে। এতবড় ঘটনার অভিযুক্তকে এভাবে ছেড়ে দিলেন কেন জানতে চাইলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে এড়িয়ে যান প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন।
প্রসঙ্গত: ইতিপূর্বে ফেসবুকে বঙ্গবন্ধু কটুক্তিকারীর শাস্তির অনেক নজীর আছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে।
Leave a Reply