বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৩ অপরাহ্ন
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার হোসেন্দী অর্থনৈতিক অঞ্চলের উদ্বোধন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার সকাল ১০টায় (২০ নভেম্বর) মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন হোসেন্দী অর্থনৈতিক অঞ্চল সহ ৫০টি শিল্প-কারখানা ও অবকাঠামোর উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। এসময় হোসেন্দী অর্থনৈতিক অঞ্চলের সিটি সিড ক্রাশিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমেটেড ও সিটি পলিমার লিমিডেট নামে দুটি ইন্ডাস্ট্রির উৎপাদনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এবং ঢাকা সল্ট এন্ড কেমিক্যাল লিমিটেড, ঢাকা সুগার লিমিটেড, ইউকে বাংলা পেপার লিমিটেড, ইউকে বাংলা সিমেন্ট লিমিটেড, সিটি এলপিজি লিমিটেড ও হোসেন্দী শিপ বিল্ডিং লিমিটেড ইন্ডাস্ট্রির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন সরকার প্রধান।
গজারিয়া প্রান্তে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা এমপি এবং হোসেন্দী অর্থনৈতিক অঞ্চলের চেয়ারম্যান মিসেস সম্পা রহমান, পুলিশের ঢাকা রেঞ্চের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল,পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান আল-মামুন, গজারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ। গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দীতে প্রায় ১৫০ একর জায়গার উপর নির্মণাধীন এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রাথমিকভাবে ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে সিমেন্ট, লবণ, এলপিজি চিনি, শিপ বিল্ডিং সহ বিভিন্ন শিল্পকারখানা স্থাপন করা হচ্ছে।
হোসেন্দী অর্থনৈতিক অঞ্চলের জিএম (অপারেশন ও প্রশাসন) তারিকুজ্জামান তালুকদার বলেন, আমরা সবচেয়ে এগিয়ে আছি লবণের কারখানা স্থাপনের কাজে আশা করছি আগামী এক দুই মাসের মধ্যে আমরা উৎপাদনে আসতে পারবো। এখানে স্থাপন করা হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম এবং বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পেপার মিল। এখানে প্রতিবছর উৎপাদন করা হবে ৭ লক্ষ ৩০ হাজার মেট্রিক টন কাগজ। এখানে উৎপাদন করা হবে সব ধরনের টিস্যু পেপার।উৎপাদিত পণ্যের একটা বড় অংশ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা হবে।
ইউকে বাংলা সিমেন্ট কোম্পানির পরিচালক প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান বলেন, এখানে আমরা ইউরোপের প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। এক বছরে প্রায় ৫৫ লাখ মেট্রিক টন সিমেন্ট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কারখানায় স্থাপনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। পরিবেশ দূষণের দিক থেকে এটি হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে কম দূষণ মাত্রার সিমেন্ট কারখানা। পরবর্তীতে সিমেন্টের পাশাপাশি রড, টাইলস এবং নির্মাণ কাজে লাগে এরকম অনেক জিনিস উৎপাদনের পরিকল্পনা আছে আমাদের। হোসেন্দী ইকোনমিক জোনের এলপিজি প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী ফজলুর রহমান খান বলেন, এই শিল্পপল্লীতে স্থাপন করা হবে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ধারণ ক্ষমতার এলপিজি বোতলজাতকরণ কারখানা। ১২ কেজির ৮৩ লক্ষ বোতল লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস উৎপাদন করা ছাড়াও বছরে ৭ লক্ষ সিলিন্ডার তৈরি করা হবে এখানে।
ঢাকার কাছে হওয়ায় পরিবহন খরচ কম পড়বে এবং তুলনামূলক কম মূল্যে সিলিন্ডার কিনতে পারবে সাধারণ জনগণ। হোসেন্দী অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর ১৩ লক্ষ মেট্রিক টন চিনি ও ৩ হাজার মেট্রিক টন ক্ষমতা সম্পন্ন ৫০/৬০ টি লাইটার জাহাজ উৎপাদন করতে সক্ষম মুন্সীগঞ্জের মেঘনা পার সংলগ্ন হোসেন্দী অর্থনৈতিক অঞ্চল। বিশাল এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় ১৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।
অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিরতিহীন উৎপাদন চালু রাখার জন্য ১২৫ মেগাওয়াটের নিজস্ব পাওয়ার প্লান্ট হবে। যা দিয়ে নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব। স্বনির্ভর ও টেকসই বাংলাদেশ গড়তে ২০৩০ সাল নাগাদ সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের উদ্যোগ নেয় সরকার এর মধ্যে অন্যতম ভোগ্য পণ্য সরবরাহে দেশের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার হোসেন্দী অর্থনৈতিক অঞ্চল।
Leave a Reply