মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৬ পূর্বাহ্ন
ক্রাইম রিপোর্টার- মোঃ খাইরুল হোসাইন নিশাদ
রাজধানীর জনবহুল ও ব্যস্ততম এলাকার মধ্যে সদরঘাট অন্যতম। রাস্তাঘাট সংকটের কারণে তীব্র যানজট যে এলাকার বৈশিষ্ট্য। সদরঘাট সংলগ্ন রয়েছে দেশের বেশ কয়েকটি বৃহত্তম পাইকারি বাজার। বাদামতলী ফলের আড়ৎ, বাংলা বাজার বই পাড়া, ইসলামপুর কাপড়ের পাইকারি মার্কেট, ঢাকার অন্যতম বৃহৎ শ্যামপুর কাঁচা বাজার। ফলে সদরঘাটের আশেপাশের রাস্তাগুলো জনারণ্য থাকে ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত। তাছাড়া রয়েছে বেশ কয়েকটি দেশ সেরা প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। ফলে বাংলা বাজার, ইসলামপুর, ভিক্টরিয়া পার্ক সদরঘাটের সংযোগ সড়কে দিনের বেলায় থাকে তীব্র যানজট। এ যানজটে অসহায় হয়ে পড়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও। গাজীপুর থেকে আসা বরিশালগামী এক নারী যাত্রী অভিযোগ করেন, তাকে বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় এসে বিপদে পড়তে হয়েছে। যানজটের মধ্যে বাচ্চা সঙ্গে নিয়ে চলাচল কঠিন। সঙ্গে ব্যাগ রয়েছে। বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে রিকশায় যেতে হচ্ছে। তাও রিক্সা চলতে কষ্ট হচ্ছে।
মিরপুর থেকে আসা আরেক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, রওনা দেয়ার ৫ ঘন্টা পর তাঁতীবাজার এসে পৌছাই। এই যানজট এর মূল উৎস হলো রাস্তায় অবৈধ পার্কিং এবং অবৈধ ফুটপাত ব্যবসা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের আগস্ট মাস পর্যন্ত ঢাকায় নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ১১ লাখ ৭৩ হাজার ১৬০। এর মধ্যে মোটরসাইকেলের সংখ্যাই প্রায় অর্ধেক। আর ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ২ লাখ ৫২ হাজার ৬৭৪। বাস আছে ৩৯ হাজার ৭৮২টি। গত পাঁচ মাসে সব ধরনের যানবাহনের সংখ্যা আরও বেড়েছে। কারণ, প্রতি মাসে প্রায় দেড় হাজার শুধু ব্যক্তিগত গাড়িই নিবন্ধিত হচ্ছে, মোটরসাইকেল আরও অনেক বেশি।
অন্যান্য যানবাহনের নিবন্ধনও চলছে ভীষণ অদূরদর্শিতার সঙ্গে। তা ছাড়া নিবন্ধিত নয় বা ভুয়া নিবন্ধনপত্রে কত যানবাহন চলাচল করছে, তার কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই। অন্যদিকে যানজট সামলাতে শহরে বড় বাস ঢোকা নিষিদ্ধ হয়েছে বহুদিন। জিটি রোডেও একই নিয়ম।
কিন্তু বাদ রয়ে গিয়েছে সদরঘাট রোড। শহরে চলা সাড়ে সাতশো বাসের অর্ধেকই চলে ও পথ দিয়ে। ফলে নিত্যদিনের যানজটে নাভিশ্বাস ওই এলাকার। শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সদরঘাট রোডের শেষ প্রান্তে রয়েছে বিভিন্ন অফিস । প্রতিদিনই বহু সরকারি আধিকারিক ও সাধারণ মানুষ নানা কাজে সেখানে যান। কিন্তু যানজট এতটাই যে রাস্তা পার হতেই সময় চলে যায়। এ ছাড়া বর্ধমানের দক্ষিণ দামোদর এলাকা, আরমাবাগ, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া থেকে আসা বাসগুলিও এসে ওই বীরহাটা এলাকায় যাত্রীদের নামায়। তারপর ডান দিকে মুড়ে চলে যায় আলিশা বাসস্ট্যান্ডে। তারপরেই যাত্রীদের টানতে রিকশা, টোটো ও মিনিবাসগুলির মধ্যে একরকম প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। আটকে পড়েন পথচারীরা। বাধ্য হয়ে জ্যামজমাট বীরহাটাকে এড়িয়ে অলিগলির পথ ধরে বিভিন্ন গাড়ি, মোটরবাইক, সাইকেল। তাতে ওই এলাকার চারপাশের ছোট রাস্তাগুলিও কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে যায়। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, সকালের দিকে সর্বমঙ্গলাপাড়া, ভাতছালা, কালীবাজার, বেড় মোড়, ছোটনীলপুর মোড়ের দশা একেবারে নট নড়নচড়ন। এই যানজট এর সমাধানের জন্য আদো কি নজরে আসবে উক্ত এলাকার প্রশাসনের ।
Leave a Reply