করোনাভাইরাস মহামারির সংক্রমন রোধে ১ জুলাই ভোর ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। এই প্রথমবারের মতো কঠোর লকডাউন নিশ্চিত করতে মাঠে নামানো হচ্ছে বিজিবি ও সেনাবাহিনী। পুলিশ-বিজিবির পাশাপাশি সেনাসদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন। স্থানীয় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় কওে যৌথ বাহিনীর ন্যায় কাজ করবেন তারা।
কঠোর লকডাউন প্রতিপালনে আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কঠোর লকডাউন নিশ্চিত করতে ২১টি বিধি-নিষেধ জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায় মাঠ পর্যায়ে কার্যকর টহল নিশ্চিত করতে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়েন করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয় সেনা কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত করবেন। এছাড়া ম্যাজিস্ট্রেট জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভা করে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও আনসার নিয়োগ এবং টহলের অধিক্ষেত্র, পদ্ধতি ও সময় নির্ধারণ করবেন। পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে বিশেষ কোনো কার্যক্রমের প্রয়োজন হলে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলো এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সকল নির্দেশনা প্রদান করবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তার পক্ষে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রদান করবেন। প্রজ্ঞাপনে বিধি নিষেধ জারি করে বলা হয়, কঠোর লকডাউনে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবেন না। তবে কারণ ছাড়া বের হলেই তাকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
লকডাউনে অভ্যন্তরীণ বিমানসহ সড়ক, রেল, নৌপথের সকল গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। এমনকি সকল প্রকার যন্ত্রচালিত যানবাহন বন্ধ থাকবে। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বন্ধ থাকলেও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকবে। বিদেশগামী যাত্রীরা তাদের আন্তর্জাতিক ভ্রমণের টিকেট প্রদর্শন করে গাড়ি ব্যবহার পূর্বক যাতায়াত করতে পারবে। তাছাড়া পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক, লরি, কাভার্ডভ্যান, কার্গো ভেসেল নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে। জরুরি পরিসেবা ছাড়া সকল সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি অফিসসমুহ বন্ধ থাকবে। জরুরি পরিসেবা ছাড়া সরকারি বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। তবে পরিসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে যাতায়াত করতে হবে।
এতে বলা হয়, জরুরি পরিসেবা আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি পরিসেবা যেমন; কৃষিপণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি) খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, রাজস্ব আদায় কার্যাবলি, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ফার্মেসি ও ফার্মাসিউটিক্যালসসহ অন্যান্য জরুরি/অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহের কর্মচারি ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে যাতায়াত করতে পারবে।
খাবারের দোকান, হোটেল রেস্তোঁরা ছাড়া দোকান পাট, শপিংমলসহ মার্কেট বন্ধ থাকবে। এতে বলা হয়, শপিংমল, মার্কেটসহ দোকান পাট বন্ধ থাকবে। তবে খাবারের দোকান, হোটেল রেস্তোঁরা সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত (অনলাইনে) খাবার বিক্রয় করতে পারবে। সেখানে বসে খেতে পারবে না কেউ।
Leave a Reply