নেইমার পুরো ব্রাজিল ফুটবল দলেরই প্রাণভোমরা। টুর্নামেন্টজুড়েই খেল দেখিয়ে আসছেন তিনি। প্রায় প্রতিটি জয়েই রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। শুধু যে এই টুর্নামেন্ট তা নয়, ব্রাজিলের হয়ে মাঠে নামলেই তিনি হয়ে উঠছেন বিপক্ষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক খেলোয়ার।
তবে এ পর্যন্ত ব্রাজিলের হয়ে ১১০ ম্যাচ খেলে ৬৮ গোল করার পাশাপাশি ৪৯ গোলে সহায়তা করেছেন ব্রাজিলের কিংবদন্তী নেইমার। অর্থাৎ ১১০ ম্যাচ খেলেই ১১৭ বার হয় গোল করেছেন, নয়তো গোল দিতে তিনি সহায়তা করেছেন। তা বিপক্ষের খেলোয়াড়েরা কেন তাঁকে নজরে রাখবে না, বলুন?
এ ব্যাপারে ব্রাজিলের স্ট্রাইকার এই নেইমার জুনিওরকে এক প্রশ্ন করলে মুচকি হাসি দিয়ে নেইমার বলেছেন,আমি আসলে চেষ্টা করি ভালো খেলতে। সেটা না পারলে অন্তত অন্য কিছু দিয়ে পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি।’
এই ‘অন্য কিছু’ কি অভিনয়? এমন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ভুরু কুঁচকে আনমনা হয়ে যান নেইমার। শেষতক একটি নাতিদীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, ‘এই জীবনে অনেক কষ্ট। নিন্দুকেরা নানা কথা বলবেই। আসল বিষয় হলো দলকে সহায়তা করা। তার জন্য যদি মাটিতে গড়াগড়ি খেতে হয়, খাব। আমি মাঠে না থাকায় বছর ছয়েক আগে দলকে এমন কিছুও খেতে হয়েছে, যা আমাদের জন্য।
কথাগুলো বলতে বলতেই গলা ধরে আসে নেইমারের। আমরা বুঝতে পারি তাঁর মনোবেদনার কারণ। তাঁকে জানানো হয় বাংলাদেশে ব্রাজিল সমর্থকদের সেভেন আপ দেখিয়ে ও খাইয়ে ত্যক্ত করার গল্প। এসব শুনতে শুনতে নেইমারের চোখ ছলছলে হয়ে ওঠে। তিনি নিজেই জানান তা। বলেন, এসব শুনে তাঁর পক্ষের চোখের জল ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
‘কোপার কাপে সেভেন আপ খাব’
এরপরই আবার উদ্দীপ্ত শোনায় নেইমারের কণ্ঠ। দৃপ্ত কণ্ঠে তিনি বলে ওঠেন, ‘ফাইনালে উঠে গেছি। হয় কলম্বিয়া, নয় আর্জেন্টিনাকে পাব। যদিও আমি আর্জেন্টিনাকেই চাই। আমি জানি, বাঙালি সমর্থকদের শান্তি দিতে মেসিকে কাঁদানোর বিকল্প নেই। ফাইনাল ম্যাচে জিতে কোপার কাপে সেভেন আপ খাব।
এ সময় নিজের অভিনয়দক্ষতার কথা মনে করিয়ে দিয়ে নেইমার হুমকি দিয়ে বলেন, ‘ওরা একবার গায়ে ফুলের টোকা দিয়ে দেখুক, আমি মাটিতে পড়ে দেখাব।’
সাক্ষাৎকারে নেইমার আরও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। তিনি জানান, চা ও কফি খাওয়ার জন্য বাসায় তাঁর প্রচুর কাপ আছে। তবে ২০১৪ সালের পর থেকে সেভেন আপ তিনি পারতপক্ষে ‘টাচ’ করেন না। কোনো কাপও এর জন্য বরাদ্দ রাখেন না। কোপার কাপ পেলে তাতেই ওটি খাওয়ার ইচ্ছা আছে তাঁর।
বাংলার সমর্থকদের প্রতি অকুণ্ঠ ভালোবাসা জানিয়েছেন নেইমার। বলেছেন, ‘খেলা যেকাউকে পাগল করে দিতে পারে, তোমাদের দেখেই জেনেছি। এমন সমর্থকই তো চাই।
তবে অবশ্য মেসিদের জন্যও বিশেষ কেনাকাটা করছেন নেইমার। এরই মধ্যে প্রচুর পরিমাণে টিস্যু কেনা হয়েছে বলে একটু থামুনকে জানিয়েছেন তিনি। নেইমার বলেছেন, ‘টিস্যু কিনে রেখেছি। কারও না কারও তো কাজে লাগবেই। আর কান্নাকাটির বিষয়ে মেসিদের অভিজ্ঞতা বেশি। ওঁদের দেখেই শিখেছি। আমাদেরও কিঞ্চিৎ মনোবেদনা জমেছে। সেই আলোকেই এবারের এই কেনাকাটা। ঈদে আর কিছু কিনব না
Leave a Reply