রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫৪ অপরাহ্ন
নাদিম আহমেদ অনিক, স্টাফ রিপোর্টার-
নানান ত্যাগ ও রক্তে অর্জিত বাঙ্গালি জাতির ষড়ঋতুর দেশ সোনার বাংলাদেশ। আর বাঙালির প্রিয় ঋতুগুলোর অন্যতম বর্ষা।
ইতিহাস বলে বর্ষার আগমন ঘটে অসাধারণত মনোমুগ্ধকর কদম ফুল ফোটার মধ্যে দিয়ে। আর তেমনই ফুল ফুটতে দেখা মিলতো দেশের অন্যান্য স্থান গুলোর পাশাপাশি নওগাঁ জেলার সর্বত্রই।কিন্তু কালের বিবর্তনে এই ফুল আজ প্রায় শূন্য হতে বসেছে নওগাঁ সীমানায়।
ফুটন্ত কদম ফুল সৌন্দর্যের পাশাপাশি এক নতুন সম্ভাবনায় জড়াতো দিগন্ত। প্রকৃতি যেন মনে হতো কানের দুলে সেজেছে কদম ফুল দিয়ে। এই ফুল পথচারীদের একবার হলেও নজর কাড়ে। কেউ কেউ কচি ফুল সংগ্রহ করে বাড়ির সৌন্দর্য বাড়ায় কিংবা প্রিয়জনকে উপহারও দেন।
আষাঢ়ের শুরুর আগে থেকে এবার বর্ষাকাল শুরু হয়েছে। সময় বলছে গাছে গাছে ফুটতে শুরু করেছে সুন্দরীবান্ধব কদম ফুল। বাতাসে দোল খাওয়া কদম ফুলের তালে তালে পাখিরাও নেচে আজ পাগলপারা হয়ে গাইতে থাকে মিষ্টি সুরে গান। বহু বিখ্যাত কবিতা ও গান রয়েছে বর্ষাকাল আর কদম ফুল নিয়ে। কিন্তু শহরে কিংবা গ্রামে আগের মত তেমন একটা চোখে পড়েনা বর্ষার এ কদম ফুল। ধীরে ধীরে প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে চিরচেনা বর্ষার ফুল।
সরেজমিনে নওগাঁ জেলা শহরের বেশ কিছু স্থান ঘুড়ে চোখে পরেনা মনোমুগ্ধকর এ ফুল। খোঁজ নিয়ে দেখা যায় এ জেলার অন্যান্য উপজেলা গুলোতেও লক্ষণীয় একই চিত্র।
কদম ফুল বর্ণে, গন্ধে, সৌন্দর্যে এদেশের ফুল গাছগুলোর মধ্যে অন্যতম। এ গাছের উচ্চতা হয় সাধারনত ৪০ থেকে ৫০ ফুট, কদম গাছের পাতা লম্বা, উজ্জ্বল সবুজ ও চকচকে। কদম ফুলের রয়েছে নানা উপকারিতা। কদম গাছের ছাল জ্বরের উপকারী, পাতার রস কৃমিতে ব্যবহার্য। মুখের ঘায়েও পাতার রস কার্যকরী। ম্যাচ ফ্যাক্টরীতে কদম গাছের চাহিদা সবচেয়ে বেশী। কদম গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি হয় দিয়াশলাই। প্রকৃতি এক মূল্যবান বন্ধু এই কদম গাছ।
সারাদেশে শহর থেকে শুরু করে গ্রামে-গঞ্জে সবুজ পাতার মাঝে সাদা-হলুদ গোলাকৃতির কদম ফুল ফুটতে থাকে। এই ফুল সম্পর্কে আরো জানা যায়, কদম ফুল “নীপ” নামেও পরিচিত। এছাড়াও কদম ফুলের আরো কয়েকটি সুন্দর নাম রয়েছে- যেমন বৃত্তপুষ্প, সুরভি, মেঘাগমপ্রিয়, কর্ণপূরক, পুলকি, ইত্যাদি। এর আদি নিবাস হলো- ভারতের উষ্ণ অঞ্চল, চীন ও মালয়ে। এছাড়াও বিশ্বের নানা দেশেই রয়েছে এই কদম গাছ।
এক সময় প্রচুর কদম ফুলের সৈান্দর্য্য চোখে পড়ত। যান্ত্রিক সভ্যতা ও নগরায়নের যুগে মানুষের সামান্য প্রয়োজনে কেটে ফেলছে কদমসহ বহু গাছ। যার ফলে সেই বহুগুণে গুণান্বিত কদম গাছ আজ হারিয়ে যেতে বসেছে প্রকৃতি থেকে।
Leave a Reply