বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৭ অপরাহ্ন
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
অভিভাবকদের অনুমতি ছাড়াই ১৪ বছরের কিশোরীকে বিয়ে পড়ানোর অভিযোগ উঠেছে এক কাজীর বিরুদ্ধে। অভিভাবকের উপস্থিত ছাড়াই বিয়ে সম্পন্ন করেন মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বেতকা ইউনিয়নের কাজী ইলিয়াস।
জানাগেছে, উপজেলার বেতকা ইউনিয়নের স্থাণীয় মাদ্রাসার ১০ শ্রেণীর ছাত্রী (কিশোরী) গেলো ১৩ ই সেপ্টেম্বর তরিখে বিয়ে পড়ান কাজী। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে ইউনিয়নটিতে সমালোচনার ঝড় বইছে। একই গ্রামের তাবু মাদবরের ছেলে প্রবাসী সিয়াম মাদবর এর সাথে এই বিয়ে পড়ান তিনি। এদিকে, অভিযোগ উঠেছে মোটা অংকের টাকা বিনিময়ে অবৈধভাবে এই বিয়ে সম্পন্ন করেন কাজী।
কিশোরীর পিতা বলেন, আমার মেয়ে ২০০৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী জন্মগ্রহণ করে। আমার মেয়ের বিয়ের বয়স না হওয়া সত্বেও বেতকা ইউনয়নের কজী ইলিয়াস তাকে বিয়ে পড়ান। আমার মেয়ের গলায় একটি স্বর্ণের চেইন ছিলো যাহা বিক্রি করে অনেক অর্থ হাতিয়ে ঐ কাজী। আর সেই টাকা নিয়ে কাজী অবৈধভাবে এই বিয়ে পড়ান।
এ ব্যাপারের মেয়ের ফুফাতো ভাই শামীম বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের বিয়ের বিষয়ে বললে কাজী ইলিয়াস বলেন, বিয়ে বাদ করে দেওয়া যাবে। ছেলে ও মেয়ের গার্জিয়ান নিয়ে আইসেন। কিন্তু পরে কাজী আবার বলেন, এখন তালাক দেওয়া যাবে। এছাড়া কিছু করার নাই। পরে আমি কাজী সমিতির সভাপতি বিল্লাল মিয়ার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিদেশে ছেলে থাকলে দুই পক্ষের ২ জন উকিল এবং ২ উকিলের পক্ষে ৪ জন স্বাক্ষী নিয়োগ করে টেলিফোনে বিয়ে পড়ানো যায়। কিন্তু এই কাবিনটিতে মাত্র একজন ওকিল নিযুক্ত করে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়েছে যা, আইন অনুযায়ী বৈধ নয়।
অপরদিকে, কাবিননামা যাচাই করে দেখা যায় ওই ছেলে বিদেশ থাকলেও কাজী ছেলে পক্ষের কোন উকিল নিযুক্ত করেন নাই। নিয়ম অনুযায়ী ছেলে পক্ষে ২ জন স্বাক্ষী দেওয়ার কথা থাকলেও মাত্র ১১ বছরের এক কিশোরীকে স্বাক্ষী মনোনিত করে সম্পূর্ণ আইন বহিভূর্তভাবে বিয়েটি সম্পন্ন করা হয়েছে।
কাজী সমিতির সভাপতি বিল্লাল হোসেন বলেন, বিদেশে ছেলে থাকলে দুই পক্ষের ২ জন উকিল এবং ২ উকিলের ৪ জন স্বাক্ষী নিয়োগ করে টেলিফোনে বিয়ে পড়ানো যায়। কিন্তু এই কাবিনটিতে মাত্র একজন উকিল নিযুক্ত করে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়েছে যা আইন অনুযায়ী বৈধ নয়। আমি কাজী সাহেবকে বিষয়টি বলছি।
মুন্সীগঞ্জ কাজী সমিতির আইন বিষয়ক সম্পাদক কাজী আহাদ বলেন, ছেলে বিদেশে থাকলে অবশ্যই ওই ছেলেকে সনাক্ত করার জন্য ছেলের কাছের রক্তের সম্পর্ক আছে এমন কাউকে ছেলে পক্ষে উকিল নিযুক্ত করতে হবে। এবং কাবিননামায় ওই উকিলের স্বাক্ষর নিতে হবে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কাজী ইলিয়াস বলেন, ওই মেয়ের বিয়ের সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আশায় আমি বিয়ে পড়াইছি। তবে মেয়ে পক্ষের লোকজন কম থাকায় সে সময় সকল সাক্ষী নিতে পারি নাই। পরে এসে সাক্ষী দিয়ে যাবে বলেছে। ছোট অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোরীকে বিয়ে পড়ানোটা তার ঠিক হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আসলে সকল কাজীরাই পড়ায়।
Leave a Reply