সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
মুন্সীগঞ্জ এভিজেএম সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর সাথে কাপড়ের দোকানের মালিক হাসান (৪৫)। সে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার হাটলক্ষীগঞ্জ গ্রামের সামসোদ্দাহার ছেলে।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) মুন্সীগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টে জামিন আবেদন করলে কোর্ট তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। মামলার সূত্র ধরে জানা যায়, ২৪ মে ২০২৩ দুপুর ১২.৩০ মিনিটের সময় ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।মুন্সীগঞ্জ বাজার দেওয়ান প্লাজার ললনা কর্নার নামক রেডিমেট পোশাকের দোকানে কাপড় চোপড় কেনা কাটা করতে গিয়ে সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ১৬ বছরের একটি শিক্ষার্থীর (কাল্পনিক নাম: কল্পনা (১৬) এর সাথে সম্পর্ক তৈরী করার চেষ্টা করে। ইভটিজিং সহ নানা ধরনের অপরাধ সংঘঠিত করেই ক্ষ্যান্ত হননি এই হাসান।
সবশেষে ২৪ মে ২৩ইং তারিখ মেয়েকে মিথ্যা প্রলোভন ও ফুসলিয়ে এডভোকেট মমতাজের ৪তলা বিল্ডিংয়ের ৪র্থ তলায় র্ধষকের বোন শেফালীর বাসায় নিয়ে নাবালিকা মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে র্ধষণ করে। ধর্ষণ শেষে নাবালিকা মেয়েকে হুমকি দেয় যে, ঘটনার বিষয়ে কাউকে জানাইলে বড় ধরনের ক্ষতি করবে। পরবর্তীতে এই অবস্থায় মেয়েকে তার জোরপুকুর পাড় বাবার বাড়িতে নিয়ে যায়। ২৯ মে ২৩ তারিখ মেয়ের বিভিন্ন বিষয়ে সমস্যা হওয়ায় ঘটনাটি প্রকাশ করে।
পরবর্তীতে ০৪ জুন ২৩ ইং তরিখে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় নারী ও শিশু নিযার্তন দমন আইন ২০০০ (স:/০৩) এর ৯(১) কুজু করা হয় যার মামলা নং ০৭। মামলার পরেই কয়েকটি গ্রুপে ছেলের পক্ষ থেকে চাঁদাবাজি ও বিচার মিমাংসার নামে সাড়ে ৫লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই ৫লাখ টাকার মধ্যে তৎকালিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই ইলিয়াস ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ধর্ষক হাসানের কাছ হতে। হাসানের বাবা সামসুদ্দোহার কাছ থেকে আরো বেশ কিছু তথ্য মিলবে মামলাটির বিষয়ে।
অপর একটি সূত্র থেকে জানা গেছে এস.আই ইলিয়াস ১০লাখ টাকার বিনিময়ে ধর্ষিতার পরিবারের সাথে মিমাংসা করে দেয়ার অফার দেয়। কিছুদিন পরেই এস.আই ইলিয়াস মুন্সীগঞ্জ থেকে বদলী হয়ে ঢাকায় কর্মরত হলে তার বিষয়টি চাপা পড়ে যায় এই মামলার সম্পৃকতা থেকে। ধর্ষণের মামলা পূর্বে ধর্ষিতা মেয়ের বাড়ি নিয়ে সমস্যায় মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় বিচার মিমাংসা কাছে এস আই ইলিয়াস তদন্ত অফিসার ছিলেন । সেই সূত্র ধরেই এসআই ইলিয়াসের মাধ্যমে ধর্ষণের মামলাটি থানায় হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিচারক জানান, মেয়েটির জায়গা সম্পত্তি নিয়ে সমস্যা ছিল সেই সম্পত্তির বিরোধ শেষ করে দিয়েছি। এস আই ইলিয়াসের ১০ লাখ টাকা সমাধানের চেষ্টার ফলে এই বিষয়টি আর সমাধান হয়নি। বর্তমানে ধর্ষণকারী হাসান জেল হাজতে আছে। এস.আই ইলিয়াস জানান, রাজিয়া সুলতানার সাথে তার কোন সম্পর্ক ছিল না। এমন ধর্ষণের কোন ঘটনা আমার জানা নেই। বর্তমানে বাদী রাজিয়া সুলতানা খুবই বিপদে আছে।
রাজনৈতিক নেতাদের চাপে ধর্ষিতার পরিবার কোনভাবে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশা করছে না। একদিকে ধর্ষনের মামলা বিচার হয়েছে রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে, অপর দিকে ধর্ষকের পরিবারে কাছ হতে লক্ষ লক্ষ টাকার দিয়েও বিপাকে উভয় পরিবার । ওসি ও পুলিশ সুপারের নাম ভাঙ্গিয়ে পারভেজ বেপারী হাসানের বাবা সামসুদ্দোহার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এমন অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ধর্ষক হাসানের বাবা সামসুদ্দোহা জানান, চরমুক্তারপুরের দিদারের মাধ্যমে সাড়ে ৫লাখ টাকা দেওয়ার পরেও আমার ছেলেকে ধর্ষণের মামলা থেকে রক্ষা করতে পারিনি। আমার ছেলে আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
এ বিষয়ে পারভেজ বেপারীর তার সেল ফোনে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আসছে সে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। চরমুক্তারপুরের যারা আমার বিরুদ্ধে বলছে তারা খুবই খারাপ প্রকৃতির লোক। ওরা আমার নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। এসআই সজিবুল ইসলাম জানান, ধর্ষিতার মা ভয়ে আছে।
ঘটনার বিষয়টি স্পষ্ট যে মেয়েকে র্ধষণ করা হয়েছে। তারপরেও ধর্ষিতার পরিবার যদি কোন ধরনের আতংক বা সমস্যা ফিল করে সাথে সাথে আমাকে জানালে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। ধর্ষক হাসানের জাবিন আবেদনকারী সেরেস্তার জুনিয়র এডভোকেট লাকী আক্তার জানান, মামলাটি সরাসরি ধর্ষণের মামলা, জামিন অযোগ্য।
আসামীকে জামিন প্রার্থণার জন্য আদালতে সোপর্দ করা হয়েছিল। আদালত জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
Leave a Reply