মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩১ পূর্বাহ্ন
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
নদীর পাড় ও আশপাশের বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি দখল করে নিচ্ছে একটি প্রভাবশালী মহল। নদীর জায়গা লিজ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ফলে প্রভাবশালীদের দখলে চলে যাওয়ায় এখন এই শাখা নদীটি সরু হয়ে গেছে। আধা কিলোমটার নদীর জায়গা দখল হয়ে গেছে। স্থানীয় বিএনপি ও জামাত নেতা মহিউদ্দিন মোল্লার মাধ্যমে কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান দখল করে নিচ্ছে নদীর পাড় ও আশপাশের বাড়িঘর। পুরো নদীটিই এক সময় গিলে খাবে এই সকল প্রভাবশালী কোম্পানী। বাড়িঘর ভেঙ্গে জবর দখলের রাম রাজত্ব চলছে এখানে। হোসেন্দি ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল মতিন মন্টু, সাধারণ সম্পাদক মো: সাহাব উদ্দিন, দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও সাবেক কমান্ডার তানেছ উদ্দিন আহম্মেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গজারিয়া উপজেলা বিআরডিবির চেয়ারম্যান মো: সেকেন্দার আলীর স্বাক্ষর সম্বলিত একটি অভিযোগ জেলা প্রশাসক বরাবর ৩১ আগস্ট গজারিয়া হোসেন্দির মেঘনার শাখা নদী ভরাট বন্ধে কার্যকরি পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আবেদন করেছেন।
কয়েক হাজার মানুষ কাজলা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছে কয়েক হাজার মানুষ। প্রকাশ্যে দিবালোকে ড্রেজার দিয়ে নদী ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করে কার্পেটিং হচ্ছে প্রশাসন কিছুই বলছে না। প্রশাসন কিছু না বলার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে গজারিয়াবাসীকে। প্রশাসনকে মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে প্রভাবশালী মহলকে কাজলা নদী ও আশপাশের ব্যক্তিমালিকানা জায়গা দখল করে নিচ্ছে। কাজলা নদী ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করে যাচ্ছে প্রকাশ্যে দিবালোকে। কারো কাছে কোন অভিযোগ দিয়ে ফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ গজারিয়া সাংবাদিকদের।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে দেখা যায় তারা প্রকাশ্যে এবং রাতের আঁধারে এবং দিবালোকে নদী ও আশপাশের ব্যক্তি মালিকানা ও খাস খতিয়ানের জায়গা ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করে ফেলেছে একটি শক্তিশালী প্রভাবশালী মহল। হোসেন্দি ইউপি সদস্য মহিউদ্দিন মোল্লা খাস খতিয়ানের জায়গা, ব্যক্তি মালিকানা ও নদী দখল করে ভরাট করে প্রভাবশালী মহলের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী জানান, পূর্বে ৫০,০০০টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই জরিমানা দিয়েই কি নদী দখল করার অনুমতি পেয়েছে এমন প্রশ্ন করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হতচকিত হয়ে বলেন, ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হয়েছে কাজ বন্ধ করে দেয়ার নোটিশ করা হয়েছে। মাঝে মধ্যেই অভিযান চালান উপজেলা প্রশাসন। গজারিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) জিএম কাদের জানান, রাতে ভরাট করার সময় ৫জনকে আটক করা হয় পরবর্তীতে চেয়ারম্যানের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।
এ বিষয়টি নিয়ে ফোন দেয়া হয় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ¯েœহাশীষ দাশ জানান, নদীর যেটুকু ভরাট করেছে মহিউদ্দিন মোল্লা সেটুকু নদীর আকার করে ভরাটকৃত বালু সরিয়ে দিবেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, মহিউদ্দিন মোল্লা প্রশাসনের এসব কথায় কর্ণপাত না করে ভরাট কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দেদারছে। আওয়ামীলীগের কয়েকজন নেতার ছত্রছায়ায় মহিউদ্দিন মোল্লা সাধারণ মানুষের এবং সরকারি বেসরকারি জায়গা অনৈতিকভাবে ভরাট করে জোর জবরদস্তি করে বিক্রয় করে আঙ্গুলফুলে কলাগাছ হয়েছেন মহিউদ্দিন মোল্লা। শিল্পায়নের ফলে হোসেন্দির কয়েকজন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হলেও সাধারণ জনগণ কিছুই পায়নি। তাদের কারণেই প্রতিবছর খুনখারাবির মতো ঘটনা ঘটেই চলছে। এ বিষয়ে মহিউদ্দিন বলেন, আমাকে কাজ করার দায়িত্ব দিয়েছে তাই আমি ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করছি। বিষয়টি হাজী সাব জানেন। তবে তিনি জানান এটা নদী না। এটা মালিকানা জায়গা ভরাট করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল জানান, দ্রুত এসিল্যান্ডকে দিয়ে কাজ বন্ধ করানো হচ্ছে। নদী ভরাটের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নদী, খাল ও পরিবেশ রক্ষাকারী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ খান জানান, যারা প্রকাশ্যে দিবালোকে নদী দখল করে রাস্তা নির্মাণ করছে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত যেন জেলা প্রশাসক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, নদী যেভাবে ছিল সেই আদলে নদীর আকার করে দিবে প্রভাবশালী মহল এবং ভরাটকৃত বালু সরিয়ে নিতেও যেন বাধ্য করে প্রশাসন। সরকারি বেসরকারি জায়গা জবর দখল করে বিক্রিকারী মহিউদ্দিন মোল্লাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনারও দাবী জানান তিনি।
Leave a Reply